বলিউডের জনপ্রিয় কমেডিয়ান কপিল শর্মা অভিনীত এবং নন্দিতা দাস পরিচালিত “জুইগাটো” সিনেমাটি অবশেষে প্রাইম ভিডিওতে স্ট্রিমিং-এর জন্য উপলব্ধ। সিনেমাটি প্রথমে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং সমালোচকদের প্রশংসা পেলেও বক্স অফিসে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে, এই মানবিক গল্পটি অনলাইন মুক্তির মাধ্যমে আরও দর্শকের কাছে পৌঁছানোর সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
জুইগাটো: একটি মানবিক ও সংগ্রামের গল্প
সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ মানস-এর জীবন নিয়ে, যিনি একটি স্থায়ী চাকরি হারানোর পর জীবিকা নির্বাহের জন্য খাদ্য সরবরাহ কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সিনেমাটি দেখায় কিভাবে তার জীবনে একের পর এক চ্যালেঞ্জ আসে – রেটিং, শাস্তি, এবং প্রণোদনার জন্য লড়াই করে দিন কাটানোর মধ্যেই মানস তার পরিবারের জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। মানসের স্ত্রী, শাহানা গোস্বামীর চরিত্রে অভিনীত, পরিবারকে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন পার্ট-টাইম কাজ করেন।
কপিল শর্মার নতুন চরিত্রে আত্মপ্রকাশ
“জুইগাটো” কপিল শর্মার জন্য একটি বড় মঞ্চ, যেখানে তিনি তার কমেডি ইমেজ থেকে বেরিয়ে এক নতুন অবতারে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি একটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি সাধারণ মানুষের সংগ্রাম এবং সহানুভূতির গল্পটি দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা তার ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। নিজের স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা থেকে বেরিয়ে কঠিন পরিশ্রম করে এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে কপিল যে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন, তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
OTT-তে মুক্তি নিয়ে পরিচালক ও অভিনেতার অনুভূতি
অক্টোবর ২০২৪-এ কপিল শর্মা ও নন্দিতা দাস তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় "জুইগাটো"-এর OTT মুক্তির খবর শেয়ার করেন। কপিল লেখেন, “এক বছর পর, অবশেষে ‘জুইগাটো’ আপনার কাছে পৌঁছাতে যাচ্ছে। এটি এমন একটি গল্প যা সবার হৃদয়ে স্থায়ী হয়ে থাকবে।” পরিচালক নন্দিতা দাসও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন এবং জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ‘জুইগাটো’ প্রাইম ভিডিওতে স্ট্রিমিং শুরু করেছে।
একটি মানবিক গল্প এবং কপিলের অভিনয়ের পরবর্তী সুযোগ
প্রেক্ষাগৃহে সফল না হলেও, সমালোচকরা এই সিনেমাকে উঁচু মানের একটি কাজ হিসেবে অভিহিত করেছেন। কপিল তার কাজের জন্য নতুন কিছু চলচ্চিত্রের প্রস্তাবও পেয়েছেন, যার মধ্যে কিছু জটিল এবং গভীর চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ রয়েছে। তবে কপিল বলেছেন, তিনি শুধুমাত্র সেই সিনেমাগুলোই করতে চান যা তার হৃদয় স্পর্শ করে।
“আমি শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্য চলচ্চিত্র করতে চাই না। আমি যথেষ্ট উপার্জন করেছি,” বলেন কপিল। তার এই মনোভাবই প্রমাণ করে যে তিনি শিল্পের প্রতি তার ভালোবাসাকে অগ্রাধিকার দেন।
উপসংহার
"জুইগাটো" আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে সাধারণ মানুষের সংগ্রামের মধ্যেও মানবিকতা আর আত্মসম্মানের প্রতিফলন আছে। যেকোনো সাধারণ গল্পের মধ্যেও যে অন্তর্নিহিত সাহস আর ভালবাসা থাকে, সেটাই "জুইগাটো" তুলে ধরেছে। যারা বাস্তবধর্মী গল্প পছন্দ করেন, তাদের জন্য "জুইগাটো" একটি আবশ্যিক দেখার মতো সিনেমা, যা এখন প্রাইম ভিডিওতে উপলব্ধ।